পুরনো বইয়ের গন্ধের উৎস

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫ সময়ঃ ৩:০০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:০০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, পতিক্ষণ ডটকম:

image1দুনিয়ার সবকিছু ভুলে যারা বইয়ের ভিতর নাক ডুবিয়ে বসে থাকে,তাদেরকেই আমরা বইয়ের পোকা বলি।বইয়ের পোকা রবিনের কথা মনে আছে? হ্যা,ঠিক ধরেছেন! তিন গোয়েন্দার রবিন মিলফোর্ড,যে কিনা বই পড়তে খুব ভালবাসে।

পাশা স্যালভিজ ইয়ার্ড কিংবা লাইব্রেরীর এককোণায় বসে পুরনো বই আর নথিপত্র ঘাটাই যার কাজ! রবিনের মতো বই পাগল চরিত্র বাস্তবেও অনেকই আছেন,যারা পুরনো গল্পের বই সংগ্রহে রাখে।

কিংবা নীলক্ষেত থেকে পুরনো গল্পের বই কিনে পড়তে পছন্দ করেন। এই বইয়ের পোকারাই কিন্তু বইয়ের ভিতরে বিশেষ গন্ধ খুঁজে পান! হাস্যকর শোনালেও এটি কিন্তু আসলেই সত্যি!

যাদের কাছে বই পড়াটা নেশার মতো,তারা কখনোই গল্পের বই ছাড়া থাকতে পারেন না। ছোটবেলায় লুকিয়ে লুকিয়ে তিন গোয়েন্দা,টিনটিন,চাচা চৌধুরীর কমিক বই কিনে কত বকাই না শুনতে হয়েছে, অনেকেই আছে যারা হাতে কোনভাবে টাকা পেলেই চলে যান বইয়ের দোকানে! ‘বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয়নি’- লাইনটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত।বই মানুষকে জ্ঞানের পাশাপাশি বিবেক,বুদ্ধি,মনুষ্যত্ব সবকিছুরই শিক্ষা দেয়। বইমেলা গিয়ে পছন্দের বই কেনা আর লাইব্রেরীর শান্ত পরিবেশে মূহুর্তেই রাস্তার জ্যাম,সেমিস্টার ফাইনাল,বাসার বকুনি ভুলে গিয়ে প্রিয় লেখকের একটি বই নিয়ে বসে এর ভিতরে হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে আলাদা এক ধরণের আনন্দ আছে।

এই পুরনো বইগুলো হয়তো এখনো আকড়ে ধরে আছেন,বইগুলোর যেনো আলাদা একধরণের স্মৃতি,অন্যরকম একটা গন্ধ পাওয়া যায়! আপনি যেকোন লাইব্রেরীতে গেলেই দেখতে পাবেন প্রত্যেকটি তাকে সুন্দর করে বই সাজানো আছে।কিন্তু,পুরনো বইগুলোর কাছে গেলেই পাবেন একটি বিশেষ ধরণের গন্ধ,যা বই পাগল মানুষকে সম্মোহিতের মত কাছে টানতে থাকে!

এখন প্রশ্ন হলো এই গন্ধ কোথা হতে আসে? এর উৎস কি? কেউ কেউ বলে থাকেন এটি আসলে বইয়ের মলাটে জমে থাকা ধুলোবালির জন্য হয়। আবার অনেকে বলে থাকেন এই গন্ধ আসলে বইয়ের ভিতরে ব্যবহার করা কালি থেকে আসে! কিন্তু,মজার ব্যাপার হলো এই গন্ধের সাথে কাজুবাদাম আর ভ্যানিলার ঘনিষ্ঠতা পাওয়া গিয়েছে!

এখন এর আসল রহস্য জানতে হলে আপনাকে রসায়নের সরণাপন্ন হতেই হবে। কেননা, পুরনো বই থেকে আসা এই গন্ধের সাথে রসায়নের বিক্রিয়া জড়িত!

এমন সুবাসের মূল কারণ হলো কিছু রাসায়নিক জৈব পদার্থ! যেগুলো বইয়ের পাতা,কালি,মলাটে থাকে। এগুলো নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এভাবেই থাকে,এরপর বেশ কিছু সময় পর যখন বইগুলো পুরনো হয়ে যায়,যখনই খোলা হয় বা কাছে যাওয়া হয় বই থেকে গন্ধ পাওয়া যায়। জৈব পদার্থগুলো ভেঙে কিছু উদ্বায়ী রাসায়নিক যৌগ বাতাসে মুক্ত হয় এদেরকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় “উদ্বায়ী জৈব পদার্থ” অথবা VOC (Volatile Organic Compound)।

যা আমাদের নাকে আসলেই আমরা নির্দিষ্ট গন্ধটি পেয়ে থাকি! আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান করতে হলে আপনাকে বই বাধাইয়ে ব্যবহার করা এসব জৈব যৌগ যেমন বেনজালডিহাইড,ভ্যানিলিন,ইথাইল বেনজিন,টলুইন,২-ইথাইল হেক্সানলের গঠন,এদের গন্ধের তীব্রতা মোটকথা এদের পুরো রসায়নটাই জানতে হবে! এজন্যই পুরনো বইয়ের কোনটা থেকে মিষ্টি সুবাস,কোনটা থেকে কাজুবাদাম ,কোনটা থেকে ফুলের সুবাস আবার কোনটা থেকে ভ্যানিলার গন্ধ পাওয়া যায়।

প্রতিক্ষণ/এডি/রানা, সূত্র: ওয়েবসাইট

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G